পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া জানতে সঠিক একটি আর্টিকেলে প্রবেশ করেছেন। পাইকারি হারে উৎপাদনকারীদের কাছে থেকে একসঙ্গে বেশি সংখ্যক পণ্য নেওয়ার মাধ্যমে প্রাথমিক ধারণা হলো এখানে দেশ কম দামে পণ্য পাওয়া যায়।
যা আপেক্ষাকৃত বেশি দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে সরবরাহ করা হয়। এক্ষেত্রে, উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত মালামাল সংরক্ষণের জন্য গুদামঘর ব্যবস্থা করা হয়।
তারপর সেখান থেকে প্রয়োজনমতো বর্ণগুলো খোসা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সরবরাহ করা হয়। মানে উৎপাদনকারী এবং দের মধ্যে এক রকম সে তো বন্ধন তৈরির মাধ্যমে পাইকারি ব্যবসা শুরু করা হয়।
খুচরা বিক্রেতাদেরকে লাভবান হতে অনেক সময় নিতে হয়। তার পাশাপাশি এটি দেশ শ্রমসাধ্য বিষয়। অপরদিকে পাইকারি ব্যবসায়ী অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প সময়ে বেশ ভালো পরিমাণের মুনাফা অর্জন করা যায়।
তাই আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে আলোচনা করব এমন দশটি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে যা আপনারা শুরু করে অল্প সময়ের মধ্যে লাভজনক হয়ে উঠতে পারবেন।
লাভজনক ১০ টি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
আমাদের বাংলাদেশ অল্প টাকাই বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসা করা যায়। তার মধ্যে জনপ্রিয় একটি ব্যবসার নাম হল পাইকারি ব্যবসা। আমরা আপনাকে এমন কিছু পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বলব।
যে ব্যবসা গুলোর আইডিয়া নিয়ে আপনার নিজ এলাকায়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে, পাইকারিতে উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করে, সেগুলো বিভিন্ন বাজারে খুচরায় বিক্রি করে অনেক লাভজনক হতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ গ্রামের ব্যবসার আইডিয়া | গ্রামে বসে কি কি ব্যবসা করা যায়। বিস্তারিত জানুন!
তো চলুন আর সময় নষ্ট না করে জেনে নেয়া যাক। লাভজনক দশটি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত।
ফলের পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
ফল হল স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। তাই শহর অঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চল গুলোতে, বিভিন্ন ফলের চাহিদা অনেক বেশি। বাংলাদেশ এর বাজারগুলোতে প্রায়ই ১২ মাসের ফলের রমরমা আয়োজন গুলো দেখা যায়।
আপনাদের ছোট বাচ্চাদের স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফেরার সময় বা অফিস থেকে বাসায় আসার সময়, প্রত্যেকেরই হাতে প্রায় একটা না একটা ফল দেখা যায়। তার মধ্যে কলা, আপেল, পেয়ারা, আঙ্গুরসহ ইত্যাদি ফলের দোকানগুলোতে ১২ মাসে ভিড় থাকে।
বিশেষ করে কলা বাংলাদেশের ছোট ছোট বিভিন্ন চায়ের দোকানের পাশাপাশি মনিহারি দোকান গুলোতে কলা একই সাধারণ খাবার। ফলের বিশাল সমাহার দেখতে হলে পুরাতন ঢাকার বাদামতলী যেতে পারেন।
সেখান থেকে পাইকারি ক্রেতারা অল্প দামে অনেক ফল কিনে আবাসিক এলাকা গুলোতে বিশেষ করে বাজারগুলোতে ফল সরবরাহ করে থাকেন। এই পাইকারি বাজার থেকে ফল সাধারণত কার্টুন বক্সে বিক্রি করা হয়।
তাই আপনি যদি ফলের পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া বেছে নিতে চান? তাহলে অল্প প্রতি খাটিয়ে ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন।
চা পাতার পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের নিত্য দিনের জীবনের সাথে সবচেয়ে বেশি যে পণ্যটি হচ্ছে, সেটি হলো চা। বাংলাদেশের বিভিন্ন অলিতে গলিতে দেখা যায় চায়ের দোকান। কারণ প্রতিটি মানুষ এখন যা পছন্দ করেন।
বিশেষ করে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল চা উৎপাদনের জন্য সব থেকে সেরা। এর চা পাতাই রয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরি যেমন- সবুজ চা, গুলোং চা এবং প্যারাগুয়ে চা ইত্যাদি।
চা পাতা সাধারণত, সিডি, ডাস্ট এবং বিওপি গ্রেডের হয়ে থাকে। চা পাতা নিয়ে ব্যবসা শুরু করলে, প্রথম অবস্থায় এক লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা হলে জাঁকজমক ভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক পণ্যের পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের লাইট, ফ্যান, সুইচ, তার, বিভিন্ন সকেট সহ খুঁটিনাটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের বিশাল এক বাজার আছে। এ সকল পণ্যের পাইকারি ব্যবসার জন্য প্রয়োজন কিছু ভালো আইডিয়া।
শুরুতে যে বিষয়টি হল পণ্য কেনাবেচার জন্য সবথেকে উপযুক্ত একটি জায়গা নির্ধারণ করা। সেইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে একজন নিখাদ উৎপাদনকারীর কাছ থেকে মালামাল ক্রয় করা।
আপনারা ঢাকার গুলিস্তানে কাপ্তান বাজার কমপ্লেক্স রাজধানীর সব থেকে বিদ্যুতিক যন্ত্রাংশের মার্কেট থেকে মালামাল ক্রয় করে, নিজের এলাকায় খুচরাতে বিক্রি করে দ্রুত লাভবান হতে পারবেন।
স্টেশনারি পণ্যের পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
বিভিন্ন বাসা বাড়ি থেকে শুরু করে অফিস আদালত সব জায়গায় স্টেশনারি পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই ব্যবসার বাজার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাবে।
বিশেষ করে খাতা, কলম, রাবার, পেন্সিল আরও প্রভৃতির জিনিসপত্রের একটা বৃহৎ মার্কেট হলো শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। খুচরা দামে স্বল্পতার পাশাপাশি এই ধরনের পণ্যগুলো গ্রাহকের বয়সের পরিধি বিশাল।
তাই এই আইডিয়া থেকে আপনি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে নিতে পারেন। আপনি যদি স্টেশনারি পাইকারি ব্যবসা শুরু করেন সেক্ষেত্রে, ৪০ থেকে ৫০ পার্সেন্ট লাভ করতে পারবেন। তাই দ্রুত সফলতা পেতে স্টেশনারি পণ্যের পাইকারি ব্যবসা শুরু করে দিন।
টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
বর্তমানের তুলনামূলকভাবে অল্প পুঁজিতে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে চাইলে টি-শার্ট ব্যবসা সব থেকে অন্যতম। কাপড় শিল্পে বাংলাদেশে এমনিতেই জগৎজোড়া খ্যাতি রয়েছে।
তাই পাইকারি দামে টি-শার্ট সংগ্রহের জন্য কারখানা খুঁজতে তেমন কষ্ট হয় না। এগুলো সাশ্রে মূল্যে তৈরি হয়, বিশ্বমানের টিশার্ট গুলো। এ টি শার্ট ব্যবসায়ী লাভ করতে হলে কৌশলী হতে হয়।
টি-শার্ট ব্যবসার কার্যক্রমে কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে হবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক দিন, ধর্মীয় উৎসব এবং বিশেষ দিনগুলোতে। এই ব্যবসাতে লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হয়। তাই আপনি কিছু পুজি খাটিয়ে ব্যবসাটি শুরু করা যেতে পারে।
কাঁচামালের ব্যবসা করার আইডিয়া
আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রাম অঞ্চলে, ধান চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সবচেয়ে চাষ করা হয়। আর সবজির চাহিদা গ্রাম থেকে শুরু করে শহর অঞ্চলগুলোতে সব থেকে বেশি।
তাই আপনি যদি অল্প পুঁজি খাটিয়ে লাভজনক ব্যবসা করতে চান? তাহলে গ্রাম অঞ্চলের কৃষকদের কাছ থেকে তাদের কাঁচামালের ফসল গুলো পাইকারি দামে ক্রয় করে নিয়ে। সেগুলো শহরাঞ্চলে নিয়ে খুচরায় বিক্রি করে অনেক বেশি টাকা বিক্রি করতে পারবেন।
তাই আপনার ক্যারিয়ার দ্রুত উন্নত করতে চাইলে কাঁচামালের ব্যবসা শুরু করে দিন।
পাইকারি কাপড়ের ব্যবসার আইডিয়া
পাইকারি ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে কাপড়ের ব্যবসা অনেক জারজমক ব্যবসা। না চাইলে বড় বড় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে, বা বিভিন্ন পোশাক তৈরির কোম্পানি থেকে পোশাক ক্রয় করতে পারেন।
তো পাইকারি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনার প্রথমত পাঁচ লাখ থেকে দশ লাখ টাকার মত মূলধন খাটাতে হবে। এই পাইকারী কাপড়ের ব্যবসায়ী কোন লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
আপনি পাইকারিতে কাপড় কিনে নিয়ে এসে, বিভিন্ন মার্কেটে ফেল করে ডাবল লাভ করতে পারবেন।
আমরা জানি রাজধানীর ইসলামপুর অনেক আগে থেকে পাইকারি কাপড়ের জন্য বিখ্যাত হিসেবে প্রমাণিত। এখান থেকে আপনারা কাপড়ের ব্যবসা করে ভালো পরিমানে লাভ করতে পারবেন।
মুদি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
বর্তমানে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ভান্ডার হলো- মুদি দোকান। স্বাভাবিকভাবে তার জন মানুষের প্রতিদিনের খাবারের একটি বিশাল অংশের যোগান দিয়ে থাকে মুদি দোকান গুলো।
মুদি দোকানের সার্ভিস গুলো হতে পারে যেমন- চাল, ডাল, চিনি, আলু, মরিচ, পেয়াজ ইত্যাদি। এগুলো চাহিদার সারা জীবনে থাকবে। তাই দীর্ঘ সময় নির্ভরযোগ্য পাইকারি ব্যবসার জন্য জনপ্রিয় হতে পারে, মুদি দোকান ব্যবসা।
রাসায়নিক কৃষি ব্যবসার আইডিয়া
আমাদের বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। মানুষ নিজেদের জীবনধারণের জন্য কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। তাই কৃষি ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর জন্য স্মরণ গ্রাম নিয়ে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
কৃষি কাজ করার জন্য কৃষকদের বিভিন্ন সারের ও বীজের প্রয়োজন হয় যেমন- জৈব বীজ, কীটনাশক, বিভিন্ন ফসলের সার ও ভারী যন্ত্রপাতি। এছাড়া ট্রাক্টর বা কৃষিজ মালামাল পরিবহন করার বাহন রয়েছে।
এগুলোর যোগান দেয়ার কথা মাথায় রেখে গড়ে তুলতে পারেন এটি রাসায়নিক কৃষি ব্যবসা। বর্তমান সময়ে এই রাসায়নিক কৃষি ব্যবসা গুলোর অনেক চাহিদা রয়েছে।
কেক বিস্কুট ও পাউরুটির পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া
আমাদের বাংলাদেশের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় সকালের খাবার- কেক বিস্কিট এবং পাউরুটি ছাড়া চলে না। তাই বর্তমান সময়ে এই ট্যাগ বিস্কুট ও পাউরুটি গুলোর চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বিশেষ করে ক্যাট বিস্কুট ও পাউরুটির অনেক কারখানা তৈরি হয়েছে।
এখন শুধুমাত্র, কেক বা প্যাস্ট্রি দিয়ে অনেকে তৈরি করে ফেলছে অভিজাত দোকান গুলো।
কারণ এই খাবার গুলো মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় হয় চাহিদা সারা জীবন থাকবে। আপনি যদি কেক বিস্কুট ও পাউডারটির ব্যবসা শুরু করতে চান? তাহলে বিভিন্ন বেকারি থেকে পাইকারিতে পণ্য সংগ্রহ করে সেগুলো খুচরাই বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন। এই ব্যবসাতে লস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই তবে লাভের পরিমাণটাই বেশি।
শেষ কথাঃ
আমাদের আজকের আলোচনায় আপনারা জানতে পারলেন পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া, অল্প পুঁজি খাটিয়ে ব্যবসা শুরু করার দশটি সেরা উপায় সম্পর্কে।
এখন আপনার পছন্দের যেকোনো একটি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া বেছে নিয়ে, কিছু মূলধন খাটিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিয়ে নিজেকে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।
এছাড়া আমাদের এই ওয়েবসাইট থেকে, বিভিন্ন ব্যবসার আইডিয়া জানতে, নিয়মিত ভিজিট করে আমাদের পাশে থাকুন ধন্যবাদ।